Monday, February 18, 2019

Apple iPhone 8 Plus, GSM Unlocked, 64GB - Space Gray (Refurbished)


 Price:$527.47
Space Gray
Product works and looks like new. Backed by the 90-day Amazon Renewed Guarantee.
Renewed products are pre-owned products not Apple certified but have been inspected and tested by Amazon-qualified suppliers. Box and accessories may be generic. Learn more
  • GSM Unlocked Phones are ONLY compatible with GSM carriers like AT&T and T-Mobile as well as other GSM networks around the world. They WILL NOT WORK with CDMA carriers like Sprint and Verizon (Search for "Fully Unlocked iPhones" for CDMA compatible iPhones
  • Headphones, SIM Card and SIM ejector tool are not included.Product works and looks like new. Backed by the 90-day Amazon Renewed Guarantee.
    Renewed products are pre-owned products not Apple certified but have been inspected and tested by Amazon-qualified suppliers. Box and accessories may be generic. Learn more
    • GSM Unlocked Phones are ONLY compatible with GSM carriers like AT&T and T-Mobile as well as other GSM networks around the world. They WILL NOT WORK with CDMA carriers like Sprint and Verizon (Search for "Fully Unlocked iPhones" for CDMA compatible iPhones
    • Headphones, SIM Card and SIM ejector tool are not included.



Main product: amazon.com

ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনায় ম্যার্কেল

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মাইক পেন্স। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করলেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল।

গতকাল শনিবার জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে রাজনীতি ও অর্থনৈতিক বিষয়ে ট্রাম্পের নানা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন ম্যার্কেল। ওই সম্মেলনেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রগুলোকে ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।

সম্মেলন মঞ্চে এই দুই রাজনীতিকের বিতর্কের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মত-পথে বিভাজন রয়েছে।

সম্মেলন শেষে বিশ্বনেতাদের মধ্যেও আলোচনার মূল বিষয় হয়ে ওঠে এই বিভাজনের দিকটি।

মিউনিখের ব্যাভেরিয়া হোফ হোটেলে অনুষ্ঠিত ৫৫তম নিরাপত্তা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য দেন ম্যার্কেল ও পেন্স।

পেন্স ইউরোপের দেশগুলোকে ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। তবে তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত পোষণ করেন ম্যার্কেল।

ম্যার্কেল বলেন, জার্মানিতে তৈরি গাড়ি যদি হঠাৎ করেই মার্কিন সরকার তাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য হুমকি বলে মনে করে, আর শুল্ক বাড়িয়ে দেয়, তবে তা তাঁদের জন্য হতাশাব্যঞ্জক। ইউরোপীয় দেশগুলো যদি রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছেদ করে, তবে তা ভ্রান্ত রাজনীতি হবে বলে মনে করেন তিনি।

সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স ইরানের সঙ্গে বিদ্যমান পারমাণবিক চুক্তি বাতিল ও বাণিজ্য অবরোধের বিষয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাগাদা দেন। তিনি রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করেন। বলেন, এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় বন্ধুদের কোনো বিপদ হলে তাদের প্রতিরক্ষার বিষয়ে গ্যারান্টি দেওয়া সম্ভব হবে না।

পেন্স জার্মানি-রাশিয়ার যৌথ নর্থ স্ট্রিম গ্যাসলাইন প্রকল্পের বিরুদ্ধে যেসব ইউরোপীয় দেশ সমালোচনা করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানান।

পরে ম্যার্কেল মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল করলে হয়তো চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ব। কিন্তু আমরা কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়াকেও বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে পেতে চাই।’

ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি বাতিল ও বাণিজ্যিক অবরোধের বিরোধিতা করেন ম্যার্কেল। এমনটা করলে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক লেনদেন অরক্ষিত হবে বলে মনে করেন ম্যার্কেল।

ম্যার্কেল বলেন, পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করলে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়বে। বিশ্বব্যাপী নানা সংকট ও সমস্যার বিষয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। আলোচনা করতে হবে। হিংসা, অবরোধ দিয়ে বিশ্বে শান্তি ফিরে আসবে না।

এদিকে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন চলাকালে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ন্যাটোর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করা হয়।


ঋণ পরিশোধে সব ব্যবসায়ীর সমান সুযোগ চান এফবিসিসিআই সভাপতি

এফবিসিসিআই
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, ‘যাঁরা অবৈধভাবে ব্যাংকের টাকা লুটপাট করেছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে পারিপার্শ্বিক কারণে যাঁরা খেলাপি হয়েছেন, তাঁদের পাশে আমরা আছি।’ আজ রোববার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে বড়দের মতো ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্যও সমান সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীদের ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ যদি ২০ বছরের জন্য পুনঃ তফসিল করা যায়, তাহলে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা কেন সেই সুযোগ পাবেন না। আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ চাই।’

আগামী জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন ব্যবসা খাতের সুপারিশমালা সমন্বয়, পাঁচ বছরের জন্য দেশের ব্যবসা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এফবিসিসিআইয়ের ভিশন-২০৪১ বিষয়ে আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমকে পরবর্তী সভাপতি হিসেবে সমর্থন ও আগামী বাজেটে বিভিন্ন দাবিদাওয়া বাস্তবায়নই আলোচনায় প্রাধান্য পায়। এতে অধিকাংশ পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা এফবিসিসিআইয়ের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে শেখ ফজলে ফাহিমকে সমর্থন দেন।

মুক্ত আলোচনায় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। চিনি ব্যবসায়ী মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘আমরা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করি। প্রধানমন্ত্রী এক অঙ্কের সুদে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা তা পাচ্ছি।’ বাংলাদেশ ক্রোকারিজ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, ‘আমরা যাঁরা ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করি, তাঁদের কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। ঋণখেলাপিদের জন্য সব সুবিধা দেওয়া হয়।’ খেলাপি ঋণ বন্ধ করে ভালো ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, ‘কাঁচামালের ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভ্যাট দেওয়ার ব্যবস্থা ভবিষ্যতে বহাল থাকলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এ ছাড়া টার্নওভার কর দশমিক ৩ থেকে বাড়িয়ে দশমিক ৬ শতাংশ করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য বোঝা।’
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি এ বি এম মাসুদ বলেন, হেমায়েতপুরের পরিবেশবান্ধব চামড়াশিল্প নগরীতে হাজারীবাগের ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। আগামী জুনে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। তবে এখনো কাজ শেষ হয়নি। ডাম্পিং ইয়ার্ড করার কথা থাকলেও হয়নি। ফলে ধলেশ্বরী নদীসহ আশপাশের এলাকা ধ্বংস হচ্ছে। চামড়াশিল্প নগরীর সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআইকে একটি কমিটি গঠন করার অনুরোধ করেন তিনি।

ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিটি গঠন করার দাবি করেন পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা। তিনি বলেন, বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ৫০-১০০ টাকা বেড়ে গেলে গোয়েন্দারা খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। পত্রপত্রিকায় সমালোচনা করা হয়। কিন্তু যখন দাম কমে গিয়ে ব্যবসায়ীরা লোকসান গোনেন, তখন কোনো কথা হয় না।

সালাউদ্দিন লাভলু হাসপাতালে

সালাউদ্দিন লাভলু। ফাইল ছবি
অভিনেতা, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলুকে রাজধানীর আয়েশা মেমোরিয়াল হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পরিবার ও ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা যায়, দুই-তিন দিন ধরে সালাউদ্দিন লাভলুর জ্বর ছিল। শনিবার জ্বর আরও বেড়ে যায়। এরপর ল্যাবএইড হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায়, তাঁর রক্তের প্লাটিলেট কমে গেছে। পরে রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক বলেন, ‘চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন, আতঙ্কের কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, অনেক জনপ্রিয় নাটকের স্রষ্টা সালাউদ্দিন লাভলু। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘রঙের মানুষ’, ‘ভবের হাট’, ‘গরুচোর’, ‘ঢোলের বাদ্য’, ‘আলতা সুন্দরী’, ‘ডাক্তার’, ‘ঘর কুটুম’ ও ‘সাকিন সারিসুরি’।

বার্সেলোনায় ফেরার সম্ভাবনা নেই নেইমারের

প্রতিটি দলবদলের সময়ে নেইমারের বার্সেলোনায় ফিরে আসা নিয়ে সরব হয় সংবাদমাধ্যমগুলো। পিএসজিতে নেইমারের ভালো লাগছে না, নেইমার আবার বার্সেলোনায় ফিরতে চান—এমন খবর প্রায় প্রতিদিনই শোনা যায়। কিন্তু এসব খবরের পেছনে সত্যতা কতটুকু? অবশেষে মুখ খুলেছেন নেইমারের বাবা।

পিএসজিতে নেইমার সুখেই আছেন, জানালেন বাবা। ছবি: এএফপিনেইমার যখন বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে নাম লেখালেন, আশ্চর্য হননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। রেকর্ড অঙ্কে সে দলবদল হয়ে যাওয়ার পর থেকেই ফুটবল দুনিয়া কেন যেন আবারও তাঁকে বার্সেলোনায় ফেরাতে ব্যাকুল। প্রায় প্রতিটি দলবদলের সময়ই নেইমারের ন্যু ক্যাম্পে ‘প্রত্যাবর্তন’ নিয়ে নানা ধরনের খবর শোনা যায়। কিন্তু এসব খবরের যে সত্যতা মোটেও নেই, সেটিই জানিয়েছে নেইমারের বাবা
ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘টেলিফুট’ কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে নেইমারের বাবা নেইমার ‘সিনিয়র’ এসব গুজব উড়িয়েই দিয়েছেন, ‘কথাগুলো একদম মিথ্যা। বার্সেলোনা থেকে আমার ছেলেকে কেউ ফোন দেয়নি, আমরাও তাদের সঙ্গে ফেরার জন্য কোনো যোগাযোগ করিনি।’
পিএসজিতে আনন্দ ও সন্তুষ্টি নিয়েই খেলছেন নেইমার, এ কথাও বলতে ভোলেননি তিনি, ‘আমার ছেলে প্যারিসে অনেক সুখে আছে। বার্সেলোনা অন্যতম সেরা ক্লাব। কিন্তু বার্সার সঙ্গে আমার ছেলেকে জড়িয়ে যেসব খবর ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। এটা স্বাভাবিক, নেইমারের মতো একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে গুজব রটবেই, আটকানো যাবে না। কিন্তু আমি বলতে পারি, নেইমার তাঁর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পিএসজিতেই কাটাবে।’

তাহলে কি নেইমার আর কখনই পিএসজি ছাড়বেন না? এ প্রশ্নের জবাবে আবার নেইমারের বাবা কোনো নির্দিষ্ট উত্তর দেননি, ‘ভবিষ্যতে কি হয় সেটা তো বলা যায় না। প্রতি মুহূর্তেই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।’
নেইমারের মুখপাত্র হিসেবেই কাজ করেন তাঁর বাবা। এই সাক্ষাৎকারের পর নেইমারের বার্সেলোনা ফেরা-সংক্রান্ত খবরের ইতি হলেই ভালো।

মুচলেকায় পুলিশ থেকে ছাড়া পেলেন চিত্রনায়িকা সানাই

চিত্রনায়িকা সানাই

কয়েকটি গানের ভিডিওতে কাজ করেছেন সানাই। এরপর যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। দুটি চলচ্চিত্রে সাইন করেছেন। ‘ময়নার ইতিকথা’ ছবির কাজ শেষ করেছেন, আরেকটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন জায়েদ খানের বিপরীতে। গাজী মাহবুব পরিচালিত ‘ভালোবাসা ২৪.৭’ নামের এই ছবির মহরত হলেও শুটিংয়ের কোনো খবর নেই। মিউজিক ভিডিও আর চলচ্চিত্রে তাঁকে ঘিরে যতটা আলোচনা, এর চেয়ে বেশি আলোচনা তাঁর উদ্ভট সব কর্মকাণ্ড নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ফেসবুক, ইউটিউব আর টিকটক অ্যাপে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের অভিযোগ অনেক দিনের। সেই অভিযোগে আজ রোববার দুপুরে তাঁকে রাজধানীর মিন্টো রোডের পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে ডাকা হয়। সাইবার অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে সানাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্বে নিরাপদ ইন্টারনেট প্রচারণার অংশ হিসেবে আজ সানাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। সানাই ফেসবুক, ইউটিউব আর টিকটকে পোস্ট করা তাঁর ভিডিওগুলোর জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি আপলোড করা সব ভিডিও মুছে ফেলতে রাজি হয়েছেন। মুচলেকা দিয়ে তিনি লিখেছেন, আর কখনো এ ধরনের ভিডিও বানাবেন না এবং প্রকাশ করবেন না। সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কড়া নজরদারি করছে। মুচলেকা দেওয়ার পরও সানাই তাঁর কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তারকাদের অনেকেই টিকটক আর বিগোলো অ্যাপ ব্যবহার করেন। এসব অ্যাপ তরুণদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। তাই এসব অ্যাপ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারকাসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যাঁরা এসব অ্যাপ ব্যবহার করেন, তাঁদের অনুরোধ করছি, আপনারা যদি এসব ব্যবহার বন্ধ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ এমনিতে সরে যাবে।’

পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিত্রনায়িকা সানাই তাঁর মুচলেকায় লিখেছেন, ‘আমার সমালোচিত কনটেন্টগুলো কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে বা আর্থিক লাভের আশায় করিনি। আজ সাইবার অপরাধ বিভাগ ইউনিটে এসে এটা আমার অনুধাবন হয়েছে, এই কনটেন্টগুলো দেখে যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এটা আমার ভুল ছিল। আমি এ দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, এ দেশের সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে এ দেশের আইন মেনে একজন ভালো শিল্পী হতে চাই। ব্যক্তিগত বা যৌথভাবে করা বিব্রতকর ভিডিও বা ছবির জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি অবশ্যই ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকব। এমনকি আমার নিয়ন্ত্রণে থাকা সব প্রোফাইল থেকে এ ধরনের কনটেন্ট মুছে ফেলব। এর বাইরে অন্য কনটেন্টগুলোর বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতা চেয়েছি।’

সানাই সবাইকে আহ্বান জানিয়ে মুচলেকায় লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখব এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগানকে এগিয়ে নেব।’

‘গালি বয়’ রণবীরের প্রশংসায় উইল স্মিথ

রণবীর সিং ও ইউল স্মিথ

রণবীর সিং অভিনীত গালি বয় ছবিটি যেমন প্রশংসা কুড়াচ্ছে, তেমনি ব্যবসা করছে বক্স অফিসে। তবে এর সাফল্য শুধু বলিউডে থেমে নেই। ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে গালি বয়–এর হাঁক পৌঁছে গেছে হলিউডেও। সম্প্রতি হলিউড অভিনেতা উইল স্মিথ ভূয়সী প্রশংসা করলেন গালি বয় ছবিটির এবং রণবীর সিংয়ের।

লুকিয়ে বা আড়ালে প্রশংসা নয়, একেবারে জনসমক্ষে ভিডিও পোস্ট করে রণবীর সিংয়ের অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন উইল স্মিথ। নিজের ইনস্টাগ্রাম পাতায় উইল স্মিথ ‘স্টোরি’ হিসেবে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে গালি বয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন রণবীর! গালি বয়ে তুমি যা দেখালে তা দারুণ লাগল। আমার জন্য ওল্ড স্কুল হিপহপ একটা ব্যাপার বটে...। সারা পৃথিবীতে যত ধরনের হিপহপ হয়, সবই আমার পছন্দের। এগিয়ে যাও।’

এর আগে উইল যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, তখনই রণবীরের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। লম্বা সময় তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কাটান। বোঝা যাচ্ছে যে ফিরে গিয়েও রণবীরকে ভোলেননি স্মিথ, কার্পণ্য করেননি প্রশংসা করতে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

পরীক্ষা নিয়ে যত কাণ্ড!

পরীক্ষা নিয়ে যত কাণ্ড!

নতুন সরকারের নতুন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মাধ্যমিক বা এসএসসি পরীক্ষা নিতে গিয়ে বেশ ফ্যাসাদে পড়েছেন। শুরুটাই ভালো হলো না তাঁর। প্রথম দিনেই বাংলা প্রথম পত্রে দেশের নানা স্থানে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা কেঁদেকেটে বুক ভাসিয়েছে, আশাহত হয়েছেন অভিভাবকেরা। ২০১৭-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনেক পরীক্ষার্থী ২০১৬-১৮ সনের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে গিয়ে এই মসিবতে পড়ে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য বসে থাকেনি। তাৎক্ষণিক বিচারে কতল করেছে কেন্দ্রসচিবদের। ন্যায্য শাস্তিই তাঁরা পেয়েছেন। কিন্তু যাঁরা এ ভুলের সূত্রপাত করেছেন অর্থাৎ যাঁদের কারণে এসব ভুল হতে পেরেছে, তাদের বিষয়ে কোনো পক্ষের কোনো আওয়াজ আমি অন্তত শুনিনি।

আমি একটি ছোট্ট বিষয় উত্থাপন করতে চাই। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় শুধু বাংলা বিষয়ে মোট তিন সেশনের প্রশ্ন করতে হয়েছে প্রত্যেক বোর্ডকে। পত্রিকাগুলো যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৬, ২০১৮ ও ২০১৯—এই তিন বছরের ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নিতে হয়েছে। আর তাতেই এই গোল বেধেছে।
আমার খুব জানার ইচ্ছা করে, ২০১৬, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য তিন-তিনটা আলাদা সিলেবাস করতে হলো কেন? কারা সেটা করেছেন? কোন অভিপ্রায় থেকে করেছেন?
সবাই জানেন, শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা গ্রহণ করে। কিন্তু অনেকেই এটা জানেন না, সিলেবাস শিক্ষা বোর্ড প্রণয়ন করে না। সেটা করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি। তাদের কাছে কি জাতি জানতে চাইতে পারে, ২০১৬ থেকে ২০১৯—এই চার বছরে কী এমন জরুরি প্রয়োজন দেখা দেয় যে তিন-তিনবার সিলেবাস পরিবর্তন বা সংশোধন করতে হয়েছে? একজন শিক্ষক হিসেবে আমি যত দূর জানি, দুনিয়ার কোনো দেশে যখন-তখন সিলেবাস পরিবর্তন/সংশোধন করা হয় না। একটি সিলেবাস প্রণয়নে যেমন অন্তত বছর পাঁচেক সময় গবেষণা করা হয়, তেমনি যেকোনো সামান্য পরিবর্তনের জন্যও অন্তত বছর পাঁচেক তো বটেই, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক দশকেও সিলেবাসে হস্তক্ষেপ করা হয় না।

যদি মাত্র চার বছরে আমাদের সিলেবাস তিনবার সংশোধন/পরিমার্জন করার প্রয়োজন অনিবার্য হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমেই সংশ্লিষ্ট কর্তাদের এটা স্বীকার করতে হবে, সিলেবাস প্রণয়নে তাঁরা নিদারুণ ব্যর্থ ছিলেন বলেই এই কাণ্ড ঘটতে পেরেছে। কী সেই ব্যর্থতা? তাহলে কি অযোগ্য ব্যক্তিদের যুক্ত করা হয়েছিল সিলেবাস প্রণয়নে? কে, কোন ক্ষমতা বলে সেসব অযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে সিলেবাস প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন? এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে?

দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা সম্ভবত সঠিকভাবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করতে পারিনি। শিক্ষার মস্তিষ্ক কারিকুলাম, সিলেবাস। একটি সুচিন্তিত, যুগোপযোগী কারিকুলামই নির্ধারণ করবে আগামী প্রজন্ম কেমন শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দেবে। আর সিলেবাসে বিন্যস্ত থাকে কোন শ্রেণিতে শিশুকে কোন বিষয়ে কতটুকু শেখাতে হবে। সে কারণে পৃথিবীর সব দেশে কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নে খোঁজ করা হয় সবচেয়ে দূরদর্শী এমন কিছু শিক্ষাবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদকে, যাঁরা অন্তত পরবর্তী ৫০ বছরকে সামনে রেখে স্বপ্ন দেখতে জানেন। এ জন্য সরকার তার সব সামর্থ্যকে উজাড় করে কারিকুলাম স্পেশালিস্ট টিম গড়ে তোলে। নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে তাঁরা আগামী প্রজন্মের জন্য এমন এক দিকনির্দেশনা প্রণয়ন করেন, যা জাতিকে সত্যিকারের নেতৃত্ব দানের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি হলো সব সরকারের স্বজন পোষণের নিরাপদ প্রতিষ্ঠান; যোগ্যতা যেখানে কখনো বিচার্য নয়। ফলে জাতীয় স্বার্থ কোনো সরকারের আমলেই প্রাধান্য পায়নি। কারিকুলাম কমিটি গঠনের চরিত্র বিশ্লেষণ করলেও আমরা সেখানে পদাধিকারীদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা আবিষ্কার করব। ফলে, প্রকৃত শিক্ষাবিজ্ঞানী বা শিক্ষাবিদদের কোনো সুপারিশই সেখানে গ্রাহ্য হয় না। আমরা হতাশার সঙ্গে এটাও লক্ষ করব যে, শিক্ষকদের ওপর আমলাতন্ত্রের প্রাধান্য বিস্তার এখন অতি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আর তাই আজগুবি সব ঘটনা ঘটেই চলেছে। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সব বিষয়ে আমলাদের প্রাধান্য অন্য পেশাজীবী বিশেষজ্ঞদের প্রান্তিক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। আর সেই বিষবৃক্ষ প্রতিনিয়ত আমাদের স্বপ্নভঙ্গের প্রধান কারণে পরিণত হয়েছে।
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় এমন সব ঘটনা ঘটে চলেছে, এক কথায় যা অবিশ্বাস্য। যেমন, আজ মঙ্গলবার যশোর বোর্ডের আইসিটি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। কারণ, প্রশ্নপত্রে মারাত্মক ভুল ধরা পড়েছে। আইসিটি প্রশ্নপত্রের প্রায় অর্ধেক প্রশ্ন এসেছে অন্য একটি বিষয় ক্যারিয়ার শিক্ষা থেকে, যেটির পরীক্ষা আগামীকাল হওয়ার কথা। যশোর বোর্ড অবশ্য পরীক্ষার্থী, অভিভাবক সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। তবে চেয়ারম্যান মহোদয়ের অসহায়ত্ব প্রকাশিত হয়েছে অন্য একটি বক্তব্যে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, আগামীকাল নির্ধারিত ক্যারিয়ার শিক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না। তিনি বলেছেন, সেটা বলবে মন্ত্রণালয়।

আমাদের কপাল! শিক্ষা মন্ত্রণালয় এভাবেই কয়েক দশক ধরে শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওপর অন্যায্য, অপ্রত্যাশিত খবরদারি করে চলেছে। পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল তৈরি, ফল প্রকাশ একান্তই শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্ব; অন্তত ১৯৬১ সালের যে অরডিন্যান্স বলে শিক্ষা বোর্ডগুলো স্থাপিত, সে অরডিন্যান্সে তা-ই বলা আছে। কিন্তু আইনে থাকলে কী হবে? গত কয়েক দশকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রায় সব স্বায়ত্তশাসন ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। তাই কোন বোর্ডে কতজন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে, এই অতি সাধারণ তথ্যটি প্রকাশ করার কোনো অধিকার এখন কোনো শিক্ষা বোর্ডের নেই, সেটা বলার জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, নিদেন পক্ষে সচিব মহোদয় আছেন না!

স্বাধীনতা মানুষকে স্বশাসনের অধিকার প্রদান করে। আর সব ধরনের স্বশাসনই কর্তব্যবোধ দ্বারা সীমিত। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে কেবল কেন্দ্রই স্বাধীন, অপরাপর স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর। স্বাধীনতা যেখানে স্থানীয় সরকারের বিকাশ ঘটায়, এ দুর্ভাগা দেশে তা আরও কেন্দ্রীভূত করে।

আমরা কেউ জানি না আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কোন পথের যাত্রী। কিন্তু এটা জানি, উন্নতির স্বর্ণশিখরে ওঠার মহাসোপান আমাদের হাতছানি দিচ্ছে। এই যুব-আধিক্য (পপুলেশন ডিভিডেন্ট) সময়ে যদি আমরা উন্নতির জন্য যোগ্য, দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হই, তার পরিণাম হবে মারাত্মক।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে চাই, দেশে বহু কিসিমের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে জরুরি যে একটি শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সে ব্যাপারে আমরা সরকারের কোনো উদ্যোগ আয়োজন দেখতে পাচ্ছি না।

নতুন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। তিনি যেন মন্ত্রণালয়ের আমলাদের সামলান। পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধের উদ্যোগ নেন; এবং একটি শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

বাজেট দিয়ে ভোট কিনতে চান মোদি


ভারতের লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রচারের মাঠ নিজের দখলে নেওয়ার তৎপরতা জোরদার করছে; বিশেষ করে নির্বাচনের আগে সরকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে, তাতে এ বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

ভারতে নির্বাচনের আগে সরকার যে বাজেট ঘোষণা করে থাকে, তাকে ‘অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট’ হিসেবে ডাকার একটা রেওয়াজ আছে। নির্বাচনে নিজের বাক্সে যাতে বেশি ভোট পড়ে, সেদিকে খেয়াল রেখে ক্ষমতাসীন দল বাজেট পেশ করে।

নির্বাচন শেষে নতুন সরকার ক্ষমতা হাতে না নেওয়া পর্যন্ত এই সময়টুকু ক্ষমতাসীন সরকার এই বাজেটকে তার একান্ত নিজের বাজেট বলে মনে করে। তবে ফেব্রুয়ারির গোড়াতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার যে সর্বশেষ বাজেট দিয়েছে, তা মোদির পূর্বসূরিদের সব নজির ছাড়িয়ে গেছে। মোদির এই সর্বশেষ বাজেটে নজিরবিহীন কর অব্যাহতি ও অন্যান্য ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এই বাজেটে তিনটি বিষয় খোলাসা হয়েছে। এক. যেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা যাবে না জেনেও সেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রবণতায় বিজেপি এখনো আচ্ছন্ন আছে। দুই. গত পাঁচ বছরে যেসব রাজ্যে বিজেপি তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানেও নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা ভোটারদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করে যাবে। তিন. দেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তা মোদির দল এখনো আমলে নেয়নি।

অন্তর্বর্তীকালীন অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বাজেট বক্তৃতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কৃষকদের জন্য একটি বেসিক ইনকাম সাপোর্ট স্কিম চালু করা। এ বিষয়টিই বিশ্লেষকদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই খাতে প্রত্যেক দুস্থ কৃষককে বছরে ৬ হাজার রুপি বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গত কয়েক বছরে ভারতে রেকর্ডসংখ্যক কৃষক অভাব আর অনাহারের মুখে আত্মহত্যা করেছেন। প্রতি মাসে একটি পাঁচ শ রুপির নোট দিয়ে কি সেই কৃষকদের দুঃসহ কষ্ট লাঘব করা যাবে? দিনে সাড়ে ১৬ রুপি দিয়ে একজন নিরন্ন কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো যাবে?

এই সামান্য অর্থে দীনদরিদ্র কৃষকদের জীবনযাপনে কোনো পরিবর্তন আসবে না জেনেও মোদি সরকার তিন কিস্তিতে তাঁদের অর্থটা দেবে। মানে
করদাতাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে দুস্থ কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আগামী লোকসভার আগেই ২০০০ রুপি করে দেওয়া হবে। এটিকে প্রধানমন্ত্রীর পুনর্নির্বাচনের ভর্তুকি বলা যেতে পারে।

এই বাজেটে আরেকটি বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্ষেত্রে। বলা হয়েছে, যাঁদের বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ রুপি, তাঁদের করছাড় দ্বিগুণ করা হবে। অর্থাৎ আগে তাঁকে এক রুপি করছাড় দেওয়া হলে এখন দেওয়া হবে দুই রুপি। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো যেতেই পারে। কারণ, সরকার সবচেয়ে বেশি অর্থ শোষণ করছে এই শ্রেণির কাছ থেকেই। প্রতি লিটার জ্বালানিতে তাদের কাছ থেকে ২০ রুপি শুল্ক নেওয়া হচ্ছে, গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স (জিএসটি) হিসেবে একেবারে অযৌক্তিক শুল্ক নেওয়া হচ্ছে তাদের কাছ থেকে।

কিন্তু এসব নিয়ে গয়ালের বাগাড়ম্বর একেবারেই নিষ্প্রভ হয়ে যায়, যখন কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গ সামনে চলে আসে। ভারতের বেকারত্ব সংকট হচ্ছে সেই হাতির মতো, যেটি ঘরে ঢুকে পড়ার পরও গেরস্ত তার চোখ বন্ধ করে হাতির উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে চলে। এই বিজেপি সরকার ভারতকে বলা যায় ঠান্ডা মাথায় বেকারত্ব সংকটে ডুবিয়েছে। মোদির হঠকারী সিদ্ধান্তে রাতারাতি পাঁচ শ ও এক হাজার রুপির নোট তুলে নেওয়া, অযৌক্তিকভাবে জিএসটি আরোপ করা এবং ক্ষুদ্র অর্থনীতির আনাড়ি ব্যবস্থাপনা ভারতের লাখ লাখ লোককে বেকার করে দিয়েছে।

২০১৪ সালে মোদি নির্বাচনী প্রচারের সময় বছরে দুই কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা গেছে এখন ভারতে গত ৪৫ বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ অবস্থানে। দেশটির ৬ দশমিক ১ শতাংশ লোক এখন বেকার। শহরাঞ্চলের ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ ও যুবকদের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেকার। আর এই অঞ্চলে নারীদের মধ্যে বেকার ২৭ দশমিক ২ শতাংশ। গত নির্বাচনে মোদি বেকারত্ব নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছেন।

এই সব ব্যর্থতা ঢাকার জন্য মোদি এখন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণিকে খুশি করতে চান। সে জন্য এই বাজেট। কিন্তু সামনের নির্বাচনে ভোটার এই বাজেটের মোহে থাকবেন কি না, তা দেখার বিষয়।

ইংরেজি থেকে অনূদিত। স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

শশী থারুর ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নেতৃত্ব দিতে হলে তারেককে দেশে আসতে হবে

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান

প্রথম আলো: বিএনপির এখন কোন পথে?

মাহবুবুর রহমান: বিএনপি অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি বলব, প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে বিএনপি চললেও এখনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে। বিএনপি নির্বাচনে গেল। কিন্তু সেই নির্বাচনে সাংঘাতিক বিপর্যয় ঘটল। যে ফলাফল এসেছে, তা ছিল অচিন্তনীয়। নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তবে এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে হবে। আমি আশাবাদী মানুষ। এখনো দলটির প্রতি দেশের ব্যাপকসংখ্যক মানুষের আস্থা আছে। সেই আস্থাকে সম্বল করেই আমাদের এগোতে হবে। আর ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য পুরোপুরি বিএনপিকে দায়ী করাও ঠিক হবে না। যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনটি পরিচালনা করেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি।

প্রথম আলো: আপনারা বলেছিলেন, ভোটবিপ্লব হবে। কিন্তু ভোটবিপ্লবটা হলো না কেন?

Eprothom Aloমাহবুবুর রহমান: প্রথমেই স্বীকার করতে হবে নেতৃত্বের ব্যর্থতা। যেভাবে নির্বাচনী লড়াইটা চালানো উচিত ছিল, সেটি আমরা অনেক ক্ষেত্রেই পারিনি। দলের হাইকমান্ড বা শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক দূর থেকে বিষয়টি দেখেছেন, পরিচালনা করেছেন। এ ক্ষেত্রে যোগাযোগেরও ঘাটতি ছিল, সমন্বয়ের অভাব ছিল, আস্থাহীনতাও ছিল। বহুদূর থেকে দল পরিচালনা করা হয়েছে, যা বাস্তবে সম্ভব নয়।

প্রথম আলো: আপনিও তো বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। এ ব্যর্থতার দায় তো আপনাকেও নিতে হবে?

মাহবুবুর রহমান: স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আমার যে দায়িত্ব পালন করার কথা, সেটি করতে পারিনি। অনেকেই পারেননি। আমরা হয়তো হাইকমান্ডকে বাস্তব অবস্থাটা বোঝাতে পারিনি।

প্রথম আলো: বিএনপি এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করেন?

মাহবুবুর রহমান: বিএনপি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত দল। তাঁকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। তাঁর প্রচণ্ড সাহস ও নৈতিক জোর ছিল। দুর্নীতির সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি। যারা ছোটখাটো দুর্নীতি করেছে, তিনি তাদেরও ছাড় দেননি। আমি মনে করি, জিয়াউর রহমানের নীতি 
ও আদর্শ মেনে চললে এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব নয়।

প্রথম আলো: নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্যের অভিযোগ এসেছিল। আমরা নয়াপল্টনে বিএনপির অফিস ও গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের অফিসে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটতে দেখেছি।

মাহবুবুর রহমান: জিয়াউর রহমান যে দলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই দলের মনোনয়ন-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। মনোনয়ন-বাণিজ্য হোক বা না হোক, জনগণের মধ্যে সেই ধারণা পোক্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে দলীয় নেতৃত্বকে আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে, যাতে এ ধরনের অভিযোগ না ওঠে।

প্রথম আলো: নির্বাচনী ব্যর্থতার জন্য কি হাইকমান্ডকে দায়ী করবেন?

মাহবুবুর রহমান: এ ব্যাপারে হাইকমান্ড দায়ী কি দায়ী নয়, সে কথা আমি বলব না। তবে যেভাবে মোকাবিলা করার কথা ছিল, তাঁরা সেটি করতে পারেননি।

প্রথম আলো: স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়েও আপনি নিজে কেন প্রার্থী হলেন না?

মাহবুবুর রহমান: দল থেকে আমাকে প্রার্থী হতে বলেছিল। আমি রাজি হইনি। আমার বিশ্বাস ছিল, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে গিয়ে কী হবে। অতীতেও নির্বাচন কমিশন  সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন আরও বেশি নিয়ন্ত্রিত ছিল। সরকার যা চেয়েছে, তা-ই তারা করেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশই ছিল না।

প্রথম আলো: নির্বাচনী পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আপনারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন।

মাহবুবুর রহমান: সংলাপ তো ভালো বিষয়। সমস্যার সমাধানে এটাই উত্তম উপায়। এ কারণে আমরা সংলাপে গিয়েছি। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। সরকার কথা রাখেনি। নির্বাচন কমিশন সরকারের ইচ্ছের বাইরে কিছু করেনি। সিইসিসহ পাঁচজন নির্বাচন কমিশনের মধ্যে মাহবুব তালুকদার ছাড়া কেউ চাননি নির্বাচন সুষ্ঠু হোক।

প্রথম আলো: কিন্তু শেষ দিকে মাহবুব তালুকদারও তো পিছু হটেছেন। তিনি বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে, এটাই বড় অর্জন।

মাহবুবুর রহমান: আমি মনে করি, তাঁর আন্তরিকতা ছিল, চেষ্টা ছিল। কিন্তু তিনি একা তো কিছু করতে পারেন না। টিমের সবাই বিপরীতে গেলে, তিনি কী করবেন। তবু তিনি সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

প্রথম আলো: আপনারা বলেছেন, নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল তো নির্বাচনে জয়ী দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে।

মাহবুবুর রহমান: বিএনপির ব্যর্থতা হলো আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আমরা প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে পারেনি। কিছু কিছু চেষ্টা হয়েছিল। এখানে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়েছে। আমার ধারণা, আন্তর্জাতিক মহলকে বোঝাতে পারলে আমরা তাদের সমর্থন পেতাম। এ নির্বাচনে মহা অন্যায় হয়েছে। কিছু কিছু পত্রপত্রিকায়ও এসেছে। তারপরও বলব, এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে হবে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন আছে। দলের বহু ত্যাগী নেতা-কর্মী এখনো জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু দলের ভাগ্য নির্ভর করবে হাইকমান্ডের ওপর।

প্রথম আলো: হাইকমান্ডের ভুল কোথায়?

মাহবুবুর রহমান: আমি বলব, যদি দলের নেতৃত্ব দিতে হয়, তারেক রহমানকে দেশে এসেই নেতৃত্ব দিতে হবে। দল পরিচালনা করতে হবে। অন্য দেশ থেকে সেটি সম্ভব নয়। ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনিই শেষ উদাহরণ, যিনি বিদেশ থেকে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। বিএনপি আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বলেই নির্বাচনে জয়ী হতে পারেনি। তবে বিএনপির এই বিপর্যয় সাময়িক। আমরা যদি জিয়ার চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাস করি, তাহলে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাঁকে নেতা মানলে তাঁর নীতি ও আদর্শও মেনে চলতে হবে।

প্রথম আলো: নির্বাচনের প্রশ্নে দলে মতভেদ ছিল বলে গণমাধ্যমে এসেছে। এ ব্যাপারে দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে কোনো মতভেদ ছিল কি?

মাহবুবুর রহমান: চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে। তারপরও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাঁরা দুজনই নির্বাচনের বিষয়ে একমত ছিলেন। খালেদা জিয়ার অমতে কিছু হয়নি। দলীয় ফোরামে অনেক রকম আলোচনা হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। আমিও বলেছি,  নির্বাচনে গিয়ে লাভ কী। পরাজিত হবেন। যাঁরা জয়ী হবেন, তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তবে যখন নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, তখন কেউ বিরোধিতা করেননি।

প্রথম আলো: নির্বাচনের পর তো কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না।

মাহবুবুর রহমান: পরে বলতে পারেন। আগে বলেননি। আলোচনার সময় হয়তো স্থায়ী কমিটির দু-একজন সদস্যের দ্বিমত ছিল। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত যখন হলো, কেউ এর বিরোধিতা করেননি।

প্রথম আলো: বিএনপির এখনকার বিপর্যয়ের জন্য দলটির শাসনামলের ভুল কতটা দায়ী বলে মনে করেন?

মাহবুবুর রহমান: বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে, বিশেষ করে শেষ শাসনামলে (২০০১-০৬) অনেক ভুল করেছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ভালো করে তদন্ত করেনি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো পদক্ষেপ নেননি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা ব্যর্থ ছিলেন।

প্রথম আলো: একসময় বলা হতো, চীন বিএনপির সহজাত বন্ধু। তাদের সমর্থন হারালেন কেন?

মাহবুবুর রহমান: চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় জিয়াউর রহমানের আমলে। আমাকে চীনে পাঠানো হয়েছিল। সহায়তার ব্যাপারে তারা উদার ছিল। চীনের নীতি হলো ‘এক চীন’। তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিএনপির আমলে এখানে তাইওয়ানের বাণিজ্য অফিস করা হলো, প্রতিনিধি পাঠানো হলো। এতে চীন ক্ষুব্ধ ও আহত হয়েছে। পরবর্তী কালে সরকার তাইওয়ানের বাণিজ্য অফিস বন্ধ করলেও চীনের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। দূরত্ব রয়েই গেছে।

প্রথম আলো: বিএনপির ভারতনীতির কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে?

মাহবুবুর রহমান: ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমাদের তিন দিকেই তাদের সীমান্ত। এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আমরা ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে থাকব, অঙ্গরাজ্য হব না। আমি বলব, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আমাদের একটু সচেতন থাকা উচিত। অসচেতনতা বিপদ ডেকে আনতে পারে। ভারতের সঙ্গে বিএনপির যে দূরত্ব হয়েছে, তারও দায় নেতৃত্বের।

প্রথম আলো: তাহলে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেই?

মাহবুবুর রহমান: ভবিষ্যৎ আছে। পরাজয়ের গ্লানি মুছে বিএনপিকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দলের সর্বস্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে।

প্রথম আলো: বিএনপির অভ্যন্তরে গণতন্ত্র নেই। দলীয় প্রধানের আছে অপরিসীম ক্ষমতা। তিনি চাইলে যে কাউকে যেকোনো পদে বসাতে পারেন। আবার বাদও দিতে পারেন।

মাহবুবুর রহমান: দলে গণতন্ত্রচর্চা হতে হবে। সব পদে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হতে হবে। সর্বময় ক্ষমতা একজনের হাতে থাকা উচিত নয়। কেন্দ্রীয় কমিটিতেও সদস্যসংখ্যা কমানো উচিত। দলে সংস্কার প্রয়োজন। জিয়াউর রহমানের চিন্তা-চেতনা থেকে বিএনপি দূরে সরে গেছে। জনগণের মধ্যে জিয়াউর রহমানের যে আবেদন আছে, সেটি কাজে লাগিয়ে দলকে সংগঠিত করতে হবে।

প্রথম আলো: জামায়াতে ইসলামী নিয়ে এত সমালোচনা সত্ত্বেও আপনারা কেন দলটিকে বিএনপির নির্বাচনী সঙ্গী হিসেবে নিলেন? জামায়াত ছাড়া কি বিএনপি চলতে পারে না?

মাহবুবুর রহমান: বিএনপি একটি জাতীয়তাবাদী দল। তার নিজস্ব নীতি-আদর্শ আছে। তাই আমি মনে করি, এমন কোনো দলের সঙ্গে বিএনপির জোট করা উচিত নয়, যে দলটির নীতি-আদর্শ সম্পূর্ণ বিপরীত। বিএনপি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল। এই দল কেন স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করবে? বিএনপির উচিত জামায়াতের সঙ্গে জোটগত সম্পর্ক ছিন্ন করা। এ ক্ষেত্রে আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের অবস্থানকে সমর্থন করি। জামায়াত বিএনপির শক্তি নয়, বোঝা। বিএনপি কেন বোঝা বহন করে চলবে, এই প্রশ্ন দলের নেতা-কর্মীদেরও।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।


মাহবুবুর রহমান: আপনাকেও ধন্যবাদ।

Sunday, February 17, 2019

ইমরানকে ২ হাজার কোটি ডলার দিচ্ছেন যুবরাজ সালমান

পাকিস্তান সফরে গিয়ে প্রথম দিনই দুই হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। গতকাল রোববার রাতে পাকিস্তান পৌঁছান সৌদি প্রিন্স, এরপর দুই দেশের মধ্যে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এর আগে দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। তবে পাকিস্তান পৌঁছেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন যুবরাজ। এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে পাকিস্তান গেছেন সৌদি যুবরাজ। ইমরান খান ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই আর্থিক সংকট তীব্র হয়েছে পাকিস্তানের। সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়েছে ভারত। পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর (এমএফএন) মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে ভারত। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। এমন অবস্থায় সৌদি প্রিন্সের এই সফর অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানকে কিছুটা আলোর মুখ দেখাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।

চুক্তির আওতায় পাকিস্তানের বন্দর নগরী গোয়াদারে একটি তেল শোধনাগার তৈরি হবে। যাতে বিনিয়োগ করা হবে ৮০০ কোটি ডলার। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি জ্বালানি, পেট্রোকেমিক্যাল ও খনি খাত সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সৌদি প্রিন্স বলেন, ‘এটি দুই পক্ষের জন্য একটি বড় অধ্যায়। অবশ্যই এটি প্রতি মাসে এবং প্রতি বছর বৃদ্ধি পাবে। উভয় দেশের জন্য যা উপকারী হবে।’

বর্তমানে তারল্য সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার। এমন অবস্থায় এই চুক্তির মাধ্যমে সংকট উত্তরণে কিছুটা সমর্থ হবে পাকিস্তান এমনটাই আশা করছেন বিশ্লেষকেরা। গত বছরের আগস্টে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই ইমরান দেখেন রাজকোষ প্রায় শূন্য। বিদেশি সহায়তা পেতে মরিয়া ইমরান পাকিস্তানের বেশির ভাগ প্রধানমন্ত্রীর মতো তাঁর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে বেছে নেন সৌদি আরবকে। সৌদি আরবও তাঁকে নিরাশ করেনি। ৬০০ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ দেয় ইমরানকে।

পাকিস্তানের পর ভারতে সফরেও যাবেন যুবরাজ। আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার চীন সফরে যাওয়ার কথা আছে তাঁর।